বড়লেখায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ; শুরু হচ্ছে তদন্ত

মৌলভীবাজারের বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার দাস-এর বিরুদ্ধে প্রায় এক বছর আগের অনিয়ম ও দুর্নীতির লিখিত অভিযোগের তদন্ত অবশেষে শুরু হচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ ১৩ জন এলাকাবাসী এই অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবর দাখিল করেন।
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম ওই অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে নির্দেশনা আসার পরও আট মাস পার হয়ে গেলেও তদন্ত সম্পন্ন হয়নি। শেষপর্যন্ত বিভাগীয় উপ-পরিচালকের পুনঃনির্দেশে আগামীকাল সোমবার বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্তে যাচ্ছেন মৌলভীবাজার জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনিছুর রহমান।
অভিযোগকারীরা বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে অর্থের বিনিময়ে তদন্ত সংক্রান্ত নথিপত্র আটকে রেখেছিলেন। সম্প্রতি অভিযোগকারীরা বিভাগীয় অফিসে তাগিদ করলে বিষয়টি পুনরায় কার্যকর হয় এবং তদন্ত ঠিকঠাকভাবে শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হলো। তদন্ত কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীদের নোটিশ প্রদান করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার দাস বিদ্যালয়ের পুরাতন সীমানা প্রাচীর ও লোহার গেট বিধিবহির্ভূত ভাবে ভেঙে বিক্রি করে তার অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠ ও রাস্তার পাশে থাকা ছায়াবৃক্ষ তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থে কেটে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তদন্তে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও মাঠ ভরাট নামে দুটি প্রকল্পের জন্য ১ লাখ ২ হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ পাওয়া সত্ত্বেও কাজ না করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে। একই অর্থবছরে নতুন ভবন ও ওয়াশব্লক থাকা সত্ত্বেও উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ওয়াশব্লক বাবদ ২০,০০০ টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৭০,০০০ টাকা, মোট ১ লাখ টাকা বিনা কারণে আত্মসাত করার অভিযোগও রয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, নিলামকৃত ছয়কক্ষবিশিষ্ট পুরাতন ভবনের ৯৫ জোড়া ডেস্ক-বেঞ্চ, ৫টি টেবিল, ৫টি চেয়ার ও ৬টি সচল ফ্যান সরিয়ে প্রায় ৩০,০০০ টাকা ভাড়ায় একটি গুদামে সংরক্ষণ রাখা হয়। পরে শিক্ষা অফিসের নির্দেশে কিছু মালামাল অন্য বিদ্যালয়ে পাঠালেও বাকি ফার্নিচার, গেটসহ পুরাতন মালামাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগকারী তারেক আহমদ বলেন, “বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজে অজুহাত দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বহু অনিয়ম সম্পর্কে ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিলেও কোন ফল মিলেনি। পরে বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কাছে অভিযোগ জানালে তদন্তের নির্দেশ দিলেও তিনি (প্রশাসনিক কার্যালয়) অর্থের বিনিময়ে তা আটকে রাখেন।”
তদন্ত দায়িত্ব পাওয়া জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনিছুর রহমান বলেন, “রনজিৎ কুমার দাসের বিরুদ্ধে উপ-পরিচালক বরাবর দাখিল করা অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। আমি সোমবার সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন বিভাগীয় দপ্তরে প্রেরণ করবো।”
তাহির আহমদ

মন্তব্য করুন: