শতবর্ষের ইতিহাস বহন করছে ফেঞ্চুগঞ্জের ‘কামাখ্যা বাবুর বাড়ি’

শতবর্ষের ইতিহাস বহন করে আসছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও ইউনিয়নের এক জমিদার বাড়ী।তবে অনেকের কাছে বাড়িটি " কামাখ্যা বাবুর বাড়ি " নামেও পরিচিত। "জয়নারায়ণ এস্টেট " এর জমিদার জয়নারায়ণ দেব চৌধুরী ১৩৩১ বঙ্গাব্দে এই বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন।কালের ধূলোয় হারিয়ে যাওয়া এই বাড়ির বর্তমান বয়স ১০১ বছর।জানা যায়, আসাম স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত এই বাড়িটি এখানকার প্রথম কাঠের দোতলা বাড়ি।
১৮৯৭ সালে সংগঠিত ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর এ রকম আসাম স্থাপত্য স্টাইলে নির্মিত ব্যাটন বাড়িগুলো সিলেটের অঞ্চলজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। " কামাখ্যা বাবুর " বাড়ির মূল ঘরটিতে আছে মোট ছয়টি কক্ষ। টিন ,কাঠ ও ব্যাটনের ব্যবহার করা হয়েছে।সাবেকি নকশায় সজ্জিত করা হয়েছে টিনের চালা।কলকাতা থেকে বারান্দার লোহার নকশাগুলো আনা হয়েছিল।
প্রায় ৪০০ শতাংশ জায়গার উপর নির্মিত এই বিশাল বাড়িটির ভিতরে স্থাপিত হয়েছে শ্রীধর মন্দির।এখানে প্রতিদিন জলদান ও প্রতি বৃহঃস্পতিবার নারায়ণ বন্দনার আয়োজন করা হতো।মন্দিরের গায়ে উৎকীর্ণ লেখাগুলো অস্পষ্ট।তার পাশেই গরুড়স্তম্ভ ,ভোগমন্দির।ভোগমন্দিরে মূলত দেবতার ভোগ রান্নার আয়োজন করা হতো।সুদূরে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় দন্ডায়মান বাড়ির হেঁশেলটি।যাবতীয় রান্না-বান্নার কাজ চলতো এখানেই।
বাড়ির দক্ষিণে শিবসাগর দীঘি।দীঘির স্বচ্ছ জলে মাছেরা আদিম খেলায় মত্ত। দীঘির ঘাট সকলের জন্য উন্মুক্ত। শিবসাগরের সাথেই সংলগ্ন আছে শিব মন্দির। মন্দিরে দৈনিক সন্ধ্যা আরতি ,প্রতি সোমবার জলদান ও শিব চতুর্দশী তিথিতে মহানুষ্ঠান পালন করা হয়।কামাখ্যা বাবুর বাড়িটি সব সময় উৎসবমুখর হয়ে থাকতো।বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জমিদাররা আসতেন।বিভিন্ন সময়ে যআত্রা ,ঢপযাত্রার আয়োজন করা হতো।রাধিকা রঞ্জন চক্রবর্তী ,রজনী দেব সহ অনেক গুণী অভিনেতা মঞ্চ মাতাতেন।আর এখন সেই বাড়িটি পরিত্যক্ত, শূন্য, নীরব ও নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন ইসকা বলেন, "কামাখ্যা বাবুর বাড়িটি ফেঞ্চুগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী বাড়ি। বাড়ির উত্তরাধিকারীসূত্রে যারা আছেন তাদের এই ঐতিহ্যকে রক্ষা করা উচিত। প্রাচীন স্থাপনাগুলো অবিকৃত রেখে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হোক।
তাহির আহমদ

মন্তব্য করুন: