দখল আর দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে সোনাই নদীর যৌবন

এক সময় ছিল খরস্রোতা, এখন কেবল স্মৃতি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সোনাই নদী হারিয়েছে তার যৌবন। নদীর বুকে আর নেই বড় বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকার চলাচল, নেই তীরের সবুজ সৌন্দর্য। নদীর দুই পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে স্থাপনা, আর অবাধে ফেলা হচ্ছে ময়লা–আবর্জনা ও প্লাস্টিক বর্জ্য। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে, বাতাসে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ—ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয়রা। নদীর ব্রিজের নিচ দিয়ে নতুন সড়কে চলাচল করা এখন কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে পথচারীদের জন্য। দুর্গন্ধে মুখ ঢেকে যেতে হয়, বাড়ছে রোগ–জীবাণুর ঝুঁকি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লোকজন প্রকাশ্যে নদীর পাড়ে ময়লা ও আবর্জনা ফেলছে। বৃষ্টির সময় এসব বর্জ্য নদীতে মিশে যাচ্ছে। এতে পরিবেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি স্থানীয়দের জীবনযাপনও হয়ে উঠেছে কষ্টকর।
পৌর শহরের বাসিন্দা পংকজ কুমার মোদক বলেন, ‘ময়লার দুর্গন্ধে বাসায় থাকা যায় না। মাছির উপদ্রব বেড়ে গেছে। এতে রোগ–জীবাণু ছড়াচ্ছে।’
মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ী সৈয়দ বোরহান উদ্দিন জানান, ‘এভাবে চলতে থাকলে মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।’
ব্যবসায়ী পল্বব মোদক বলেন, ‘দূর্গন্ধের কারণে দোকানে কাস্টমার আসতে চায় না।’ স্থানীয় তুফায়েল আহমেদ মনে করেন, সঠিক ব্যবস্থাপনায় এই ময়লা দিয়ে জৈব সার উৎপাদন সম্ভব, আর পলিথিন পুনঃব্যবহার করে দূষণ কমানো যেতে পারে। তবে এজন্য সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
নদীর পাড়ে এমন অব্যবস্থাপনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী মনোজ কুমার মোদক। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব কার? সোনাই নদীর ব্রিজ থেকে কাটিয়ারা পর্যন্ত সংযুক্ত সড়কের পাশে ইচ্ছেমতো ময়লা ফেলা হচ্ছে। প্রকাশ্যে পয়ঃনিষ্কাশন করা হয়। দেখে লজ্জা লাগে।’
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহেদ বীন কাশেম বলেন, ‘ইতিমধ্যে পৌরসভার একটি ডাম্পিং স্টেশনের কাজ চলছে। ময়লার সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য অভিজ্ঞ একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
এ রহমান

মন্তব্য করুন: