শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন : টিকিট সংকট যাত্রীদের নিত্যসঙ্গী

পর্যটন নগরী হিসেবে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু ট্রেনের সীমিত আসন ও টিকিট সংকট পর্যটকসহ স্থানীয় যাত্রীদের ভ্রমণকে ব্যাহত করছে।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকাগামী চারটি এবং চট্টগ্রামগামী দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করে। এগুলো হলো- ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস ও উপবন এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও উদয়ন এক্সপ্রেস।
যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনগুলো নিয়মিত চললেও বগির সংখ্যা চাহিদার তুলনায় কম। প্রায় সব টিকিট অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে কাটতে হয় এবং যাত্রার ১০ দিন আগে সকাল ৮টা থেকে অনলাইনে বিক্রি শুরু হলেও প্রথম দিনেই সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। ফলে সাধারণ শ্রেণিতে ভ্রমণকারী যাত্রীদের ট্রেনের ভেতরে ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করতে হয়। সীমিত আসন বরাদ্দ, কালোবাজারি ও বিকল্প সড়ক যোগাযোগের দুরবস্থা পর্যটকদের ভোগান্তি সৃষ্টি করছে।
পর্যটকরা জানান, টিকিট না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে বাসে যাতায়াত করছেন। ঢাকার সায়মা ইসলাম বলেন, প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ট্রেনের টিকিট পাইনি। শিশুর সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রা করতে হয়েছে। এটি খুবই কষ্টদায়ক।
পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মা বলেন, শ্রীমঙ্গল দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হলেও ট্রেনের বগি ও আসন কম হওয়ায় পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা রেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কিন্তু এখনো কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই।
বগি সংকটে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রুহুল আমিন বলেন, এই সমস্যা আজকের না, অনেক দিনের। আমরা বারবার অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু শ্রীমঙ্গলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন নগরীর রেল খাতকে সবসময়ই উপেক্ষা করা হয়েছে। টিকিটের চাহিদা থাকলেও যথাযথ সেবা মিলছে না। অথচ এখানে রেলের সম্ভাবনা অনেক। দ্রুত বগি বাড়ানো না হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়তেই থাকবে। তাই আমরা চাই মৌলভীবাজারের যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, ঢাকাগামী শ্রীমঙ্গল থেকে বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা কালনী এক্সপ্রেসে ৮১টি, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে ৭০টি, পারাবত এক্সপ্রেসে ১০৫টি, উপবন এক্সপ্রেসে ৬৫টি, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে ৪৭টি এবং উদয়ন এক্সপ্রেসে ৩০টি। এসব ট্রেনে টিকিটের চাহিদা প্রচুর, কিন্তু বগির স্বল্পতার কারণে আমরা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। অ্যাপসের মাধ্যমে যে টিকিট বরাদ্দ রয়েছে তার তুলনায় অনেক বেশি চাহিদা। আমাদের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে টিকিটের চাহিদার কথা অবহিত করা হয়েছে।
তাহির আহমদ

মন্তব্য করুন: