জামালগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে দশমীর দিন উপজেলার ৫১টি পূজামণ্ডপে ভক্তদের বিদায়-বিষাদের সুরে মুখর হয়ে ওঠে পরিবেশ। দুপুর থেকে বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
উপজেলার প্রাচীনতম পূজামণ্ডপ সাচনাবাজারের জগন্নাথ জিউর আখড়া থেকে দুপুর ১টায় শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সুরমা নদীর খেয়াঘাটে বিসর্জন দেওয়া হয় দুর্গাদেবীকে। এসময় ধর্মপ্রাণ সনাতন সম্প্রদায়ের ভক্তরা ভক্তি আর আবেগের সঙ্গে বিদায় জানান দেবী দুর্গাকে।
হিন্দুশাস্ত্র মতে, বিজয়া দশমীতে দেবী দুর্গা কৈলাসে ফিরে যান। মানুষের অন্তরের হিংসা, লোভ, ক্রোধ ও অসুরিক প্রবৃত্তি বিসর্জনের মধ্য দিয়েই বিজয়ার মূল তাৎপর্য পূর্ণ হয়। এ উপলক্ষে ভক্তরা ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বিসর্জন নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ বছর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উৎসব সম্পন্ন হওয়ায় আয়োজকরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে বুধবার (১ অক্টোবর) নবমীতে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও দানবীর আলহাজ্ব মনির হোসেন। তিনি রামপুর, ধনাদাসের বাড়ি, সাচনা বাটুল দাসের বাড়ি, সাচনা পূর্বপাড়া সার্বজনীন মণ্ডপসহ একাধিক পূজামণ্ডপ ঘুরে ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া, লিটন রানা প্রধান, জামালগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমরেন্দ্র আচার্য শম্ভু, সাধারণ সম্পাদক বাবু গোবিন্দ দাসসহ স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
পূজা পরিদর্শন শেষে আলহাজ্ব মনির হোসেন বলেন, “সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এখানে ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সবাই মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করে। আমি আপনাদের সন্তান, আপনাদের ভাই—যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার চেষ্টা করব।”
লিটন রানা প্রধান বলেন, “গ্রামাঞ্চলের দুর্গাপূজায় যে আন্তরিকতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ আছে, তা শহরে পাওয়া যায় না। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার—এই চেতনায় সবাইকে মিলেমিশে থাকতে হবে।”
এ রহমান

মন্তব্য করুন: