এলাকায় উত্তেজনা
জামালগঞ্জে খুনের ঘটনায় দু'পক্ষের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে পূর্ব বিরোধের জেরে দু'পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্য কামরুল ইসলামের ছোট ভাই সেজাব হোসেন ওরফে কালা মিয়া (৪২) নিহত হয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর দু'পক্ষের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকায়। নিহতের পরিবার দাবি করছে, একটি প্রভাবশালী চক্র আসামিদের মদদ দিচ্ছে এবং ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম ও প্রতিপক্ষ আব্দুল মতিন গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে সেই বিরোধের জেরে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে কালা মিয়া নিহত হন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর নিহত সেজাব হোসেন কালার স্ত্রী বাদি হয়ে জামালগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিন পুলিশ চার জনকে গ্রেপ্তার করলেও মামলার পর আর কেউ গ্রেপ্তার হয়নি৷ মূল আসামিরা এখনও ধরা না পড়ায় পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের অভিযোগ পরিকল্পিত ভাবে প্রতিপক্ষের সোফায়েল, জুয়েল, আব্দুল্লাহ ও মতাকাব্বির কালা মিয়াকে হত্যা করেছে।
নিহতের স্ত্রী সুলেমা খাতুন বলেন, 'আমি দুই শিশু সন্তান নিয়ে অসহায়। আমার বড় ছেলে সাদমানের বয়স ৬, ছোট ছেলে সাকরানের বয়স ৪। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।'
এ কথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। শিশু সন্তান সাদমানও কেঁদে বলে, 'আমার আব্বাকে যারা মেরেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই।'
ইউপি সদস্য ও নিহতের ভাই কামরুল ইসলাম বলেন, 'আমার ভাইকে যারা খুন করেছে, তাদের নামেই মামলা করেছি। কিন্তু আসামিরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করা হোক।'
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও নিহতের খালাতো ভাই হাজী ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, 'খুনের পর আসামি পক্ষ নিজেদের ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে মালামাল সরিয়ে নিয়ে তারা বলছে আমরা লুট করেছি। আসলে একটি চক্র তাদের পেছনে আছে, যারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে চাইছে।'
নিহতের আরেক স্বজন আশরাফুল ইসলাম সিদ্দিকী রোপন বলেন, 'আমাদের কাছে ভিডিও প্রমাণ আছে, তারা নিজেরাই ঘর থেকে মালামাল সরিয়েছে। অথচ দোষ চাপাচ্ছে আমাদের ওপর। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি।'
অন্যদিকে আসামি পক্ষের নারীরা অভিযোগ করেন, আমরা নিরীহ মানুষ। খুনের ঘটনার পর বাদি পক্ষ আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। দরজা-জানালা ভেঙে আসবাবপত্র লুট করেছে।
এ বিষয়ে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, 'নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মূল আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। লুটপাটের অভিযোগও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, তবে কাউকে পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না।'
এ রহমান

মন্তব্য করুন: