দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আবার ইজারা হলো সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র

দেড় বছর পর আবারও ইজারা দেওয়া হলো সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের স্বপ্নের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে খ্যাত এই পর্যটনকেন্দ্রটি সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ৬ মাসের জন্য ৩ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ইজারা পান সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মো. লিলু মিয়া। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়। এতে ৭ জন অংশগ্রহণ করেন। দরপত্র খোলার পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে লিলু মিয়া ইজারা পান। সরকারি নির্ধারিত মূল্য ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৭৩ টাকা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “নিলাম প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ছাতকের লিলু মিয়া ইজারা পেয়েছেন।”
জানা গেছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রটি ইজারা দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে পাথর লুটসহ নানা ঘটনায় পর্যটন এলাকা হারায় অনেকাংশে আগের সৌন্দর্য। সম্প্রতি প্রশাসনের সাড়াশি অভিযানের মাধ্যমে লুণ্ঠিত পাথরের অংশ উদ্ধার ও পুনঃস্থাপনের পর কেন্দ্রটি আগের রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে।
সাদাপাথরের নতুন ইজারাদার লিলু মিয়া সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাহাদুরপুর-গনেশপুর গ্রামের তহুর আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানীগঞ্জে পাথর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন এবং তার একটি ক্রাশার মিলও রয়েছে।
নিলাম প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা ছিলেন কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া নোয়াগাঁও গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. নজমুল ইসলাম। তিনি ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা দর হেঁকেছেন। তৃতীয় স্থানে ছিলেন সিলেট নগরের উপশহর এলাকার মাওলানা মো. ইমাদ উদ্দিন, যার প্রস্তাবিত দর ছিল ৩ কোটি ৫ লাখ ৫ হাজার ৫৫৫ টাকা।
নিলাম প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ। তিনি বলেন, “পুরো প্রক্রিয়ায় প্রশাসনের নিরাপত্তা বলয় ছিল। কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
ধলাই নদীর তীরে অবস্থিত ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর শুধু সিলেট নয়, সারা দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। পাহাড়, স্বচ্ছ জল, বালু ও পাথরের মেলবন্ধনে গঠিত এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থানটি প্রতিদিনই হাজারো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে। নতুন ইজারাদারের অধীনে শিগগিরই এখানে পর্যটনসুবিধা আরও উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
এ রহমান

মন্তব্য করুন: