ছয় দফা দাবিতে বড়লেখায় স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি

বেতন বৈষম্য নিরসনসহ ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় স্বাস্থ্য সহকারীরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকে গত ১ অক্টোবর থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে, যা দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে পালিত হচ্ছে। এই কর্মবিরতির ফলে শিশুদের রুটিন ইপিআই টিকাদান কর্মসূচি এবং আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া টাইফয়েড টিকা (টিসিভি) ক্যাম্পেইনসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে বড়লেখা উপজেলার সব ইউনিয়নের স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং স্বাস্থ্য সহকারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এই কর্মসূচিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের দাবি তুলে ধরেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি মাসুক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বিকাশ দাশ, যুগ্ম সম্পাদক তাপস শেখর দেব, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ফাতেমা বেগম, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক গীতা দাস, স্বাস্থ্য সহকারী এমদাদুল ইসলাম, আলম হোসেন এবং তারেক আহমদ।
স্বাস্থ্য সহকারীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: নিয়োগবিধি সংশোধন: বর্তমান নিয়োগবিধিতে পরিবর্তন আনার দাবি। শিক্ষাগত যোগ্যতায় স্নাতক (বিজ্ঞান) সংযোজন: পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অন্তর্ভুক্ত করা। ১৪তম গ্রেড প্রদান: স্বাস্থ্য সহকারীদের জন্য ১৪তম গ্রেড নিশ্চিত করা।ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ: প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পদোন্নতি নিশ্চিত করা। টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান: স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া। ধারাবাহিক উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি: পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।
বক্তারা জানান, তাদের এই দাবিগুলো দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।
কর্মবিরতির ফলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে শিশুদের নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি এবং আসন্ন টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইন বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই দাবিগুলো বিবেচনা করে সমাধান না করলে স্বাস্থ্যসেবা খাতে আরও জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
মীর্জা ইকবাল

মন্তব্য করুন: