একজন প্রেসক্লাব সভাপতির রাজনৈতিক খায়েস!
Post Top Ad

একজন প্রেসক্লাব সভাপতির রাজনৈতিক খায়েস!

নীরব চাকলাদার

২৪/০৮/২০২৫ ০২:১৯:২২

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না: ফাইজ তাইয়েব আহমেদ

মৌলভীবাজারের সৃমদ্ধ একটি উপজেলা বড়লেখা। এই উপজেলায় জাতীয়,স্থানীয়সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীদের একমাত্র প্লাটফর্ম বড়লেখা প্রেসক্লাব। বড়লেখায় কোনদিনই আমার যাওয়ার সুযোগ হয় নি। তবে ১৯৯৪ ইংরেজি থেকে সংবাদপত্রের সাথে যুক্ত থাকায় বড়েলেখা উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা ছিল। লেখার মানদণ্ডে এবং শিক্ষাগত যোগ্যতায় এই ক্লাবের অধিকাংশই ছিল অনেক এগিয়ে। তবে সাংবাদিকতার পাশাপাশি ক্লাবের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক শিক্ষকতা, ব্যাংকিং সেক্টরসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরেও কর্মরত রয়েছেন। তার মানে ধরা যায় হাতে গোনা যে কয়েকজন আছেন, তাদের সকলেই রুচিশীল এবং ব্যক্তিত্ববান বলেই সাংবাদিকতা পেশাটি ছেড়ে যান নি। সাংবাদিকতায় তাদের সম্পৃক্ততা আমাদের আশা জাগায়, প্রেরণা জাগায় এবং সাহস যোগায়। নৈতিক অবস্থানগত কারণে তাদের ভূমিকা নি:সন্দেহে বড়লেখায় একটি ইতিবাচক ভূমিকায় থাকার কথা।


কিন্তু আমি অবাক হলাম! আশাহত হলাম! একই সাথে তাদের রুচির দৈন্যদশায় বাধ্য হয়ে আমাকে কিছু লিখতে হলো। বড়লেখা প্রেসক্লাব সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুর রব আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে অপরিচিত। তবে তাদের নাম শুনিনি, এমনটি নয়। কিন্তু আজ সভাপতি মহোদয়ের একটি পোস্টার আমাকে অনেকটা নাড়িয়ে দিল। বিষয়টিকে আমি তাদের রুচির দুর্ভিক্ষ হিসেবে বিবেচনা করছি। যে দুর্ভিক্ষ সাংবাদিকতার সাথে কখনোই যায় না। 


বড়লেখা পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের নির্ধারিত তারিখ ছিল ২৩ আগষ্ট।এই লেখা যখন লিখছি,তখন সম্মেলন শেষ। পৌর বিএনপির নতুন কমিটির নাম ঘোষণার কথা। বড়লেখায় কর্মরত কোন সাংবাদিকের মাধ্যমে এখনও ঘোষিত নতুন কমিটির নাম পাওয়া যায় নি। নিশ্চয়ই সফল একটি সম্মেলনের মাধ্যমে পৌর বিএনপি একটি নতুন কমিটি পাবে। আমি সে বিষয়ে যাচ্ছি না। ইচ্ছুক প্রার্থীরা কে কোন পদে নির্বাচিত কিংবা মনোনীত হলেন, তা নিয়েও আমার কোন আগ্রহ নেই। যেমনটি একজন সংবাদকর্মী হিসেবে থাকার কথাও নয়। তবে একটি কমিটি হলে (যে কোন দলের) তা প্রকাশ করার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা আমার দায়িত্ব।  


গেল ২২ আগষ্ট বড়লেখা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রব সাহেবের একটি পোস্ট আমার নজরে আনলেন, আমার এক সহকর্মী। বিষয়টি নিয়ে কিছু লিখার অনুরোধও করেন তিনি। কিন্তু কিছু লিখার আগে পোস্টের ছবির দিকে থাকাতেই আমি তো একেবারেই হতবাক! কয়েক মিনিট কেবল পোস্টারে লেখাগুলোর দিকে চোখ বুলাচ্ছি। পোস্টদাতা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। তিনি পৌর বিএনপির সভাপতি পদে প্রার্থী নিজ ক্লাবের সহকর্মী ও সভাপতির জন্য দোয়া চাইলেন। বাহ! যোগ্য ক্লাবের সুযোগ্য সাধারণ সম্পাদক! নিজ ক্লাবের সভাপতির প্রতি কতো অনুরাগ এবং ভালোবাসা দেখালেন তিনি। বিষয়টিকে শুধু হাস্যকর হিসেবে ভাবাটা ঠিক হবে না। এর মধ্য দিয়ে এই দু’জনের বিগত দিনের সাংবাদিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেল। আমি বিশ্বাস করতেই পারি-এই দু’জনের লেখনীতে বিগত দিনে সাংবাদিকতা কলুষিত হয়েছে। রাজনৈতিক একটি আদর্শের অনুসারী থাকায়, অন্য দলগুলোকে তাদের লিখনীতে কোনঠাসা করা হয়েছে।এই চিন্তাকে বলা হয় স্থুল চিন্তা। এই চিন্তার মানুষের ক্ষমতা লিমিটেড এবং একটি গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সীমাবদ্ধ গণ্ডির মানুষ সাংবাদিকতার মতো অসীম জগতে পা রাখা ভালো লক্ষণ নয়।


আমি আর কিছু লিখতে চাইছিনা। শুধু উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতি বিনম্র অনুরোধ, রাজনীতি করার পূর্ণ অধিকার আপনাদের রয়েছে। যদি রাজনৈতিক পেশা আপনাদের কাছে সম্মানজনক মনে হয়, দয়া করে প্রেসক্লাবের পদ থেকে সড়ে দাঁড়ান। আপনাদের স্বাধীনতা নিয়ে কারো কোন কথা বলার থাকবে না। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় থেকে রাজনীতিবিদ হওয়ার খায়েস জনমনে শত প্রশ্নের জন্ম দিবে। 


নোট : আমি নিজেও রাজনীতি করে আসা লোক। ছাত্রজীবনে উত্থাল সময় কাটিয়েছি শ্লোগানে শ্লোগানে। পরিবারের পাঠানো টাকা নিজে খেয়ে না খেয়ে দিনে রাতে ওয়াল রাইটিং,সভা পোস্টার ও লিফলেট তৈরিতে খরচ করেছি। কিন্তু সাংবাদিকতায় প্রবেশের পূর্বে রাজনীতি বিসর্জন দিয়ে এসেছি ভরা সুরমায়। এখন আমি সকল দলের,মতের,আদর্শের সাথে একাকার হয়ে কাজ করি। শুভ কামনা রইলো আপনাদের দু’জনের জন্য। 




মীর্জা ইকবাল

মন্তব্য করুন:

Post Bottom Ad
Sidebar Top Ad
Sidebar Botttom Ad