মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনা: ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে নেই কেউ, ন্যায্য ক্ষতিপূরণসহ আট দাবি

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার দুই মাস পেরোলেও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো অভিযোগ করেছেন, এখন আর কেউ তাদের পাশে নেই। দুর্ঘটনার পর প্রথম দিকে খোঁজখবর নিলেও বর্তমানে কেবল স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কেউ পাশে দাঁড়ায়নি।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব স্বীকার করে দ্রুত ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত শিক্ষার্থী নাজিয়া-নাফির বাবা আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সন্তানরা স্কুলে ছিল, সরকারের যুদ্ধবিমান স্কুলে গিয়ে পড়েছে। পৃথিবীর কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। তাই এ দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। সরকার যেন দ্রুত তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।”
নিহত তাসনিয়া হকের বাবা নাজমুল হক আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “আমাদের সন্তানদের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া মুখগুলো আমরা কবরে রেখে এসেছি। প্রতিনিয়ত সন্তানদের দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছি। আহতদের অনেকেই হয়তো আর কখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে না। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেছে।”
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে আট দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়—
১. গুরুতর আহতদের পুনর্বাসন ও সরকারি চাকরির ব্যবস্থা।
২. নিহত পরিবারের জন্য ৫ কোটি টাকা এবং আহত পরিবারের জন্য ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ।
৩. আহতদের আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি হেলথ কার্ড প্রদান।
৪. ২১ জুলাইকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শোক দিবস হিসেবে পালন।
৫. নিহতদের কবর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ।
৬. নিহত পাইলট, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্টাফদের শহীদী মর্যাদা (সনদ ও গেজেটসহ) প্রদান।
৭. নিহতদের স্মরণে উত্তরায় একটি আধুনিক মসজিদ নির্মাণ।
৮. ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার।
এসময় আহত শিক্ষার্থী রায়ান তৌফিকের বাবা সুমন, নিহত সামিউলের বাবা রেজাউল করিম শামীম এবং আহত জায়ানা মাহবুবের মা সানজিদা বেলায়েতও বক্তব্য রাখেন।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর আক্ষেপ—প্রধান উপদেষ্টা কেবল তিনজন শিক্ষকের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও অন্যান্য নিহত ও আহত পরিবারের খোঁজ নেননি। তারা বলেন, “রাষ্ট্র যদি এই দায় না নেয়, তবে আমাদের বেদনাময় জীবন আরও অসহনীয় হয়ে উঠবে।”
এ রহমান

মন্তব্য করুন: