ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ বয়কট করলো জামায়াত
Post Top Ad

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ বয়কট করলো জামায়াত

প্রথম ডেস্ক

১৭/০৬/২০২৫ ০৯:১৩:৫৪

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না: ফাইজ তাইয়েব আহমেদ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজিত সংলাপ বয়কট করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনকালীন সময় নির্ধারণ করায় সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ কারণেই প্রতিবাদস্বরূপ সংলাপে অংশ নেয়নি তারা।


ঈদের ছুটির পর মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। তিন দিনব্যাপী এই সংলাপে ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও জামায়াত উপস্থিত হয়নি।


দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “সরকার বিএনপির সঙ্গে একক বৈঠকে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারকে এ বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।”


জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তারা শুধু প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেয়নি, তবে বাকি দুই দিন অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক জামায়াত নেতা জানান, সংলাপ আয়োজকরা তাদের অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তারা দলীয় অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন।


এর আগে গত ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সংস্কার ও বিচার-প্রক্রিয়ার অগ্রগতির শর্তে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।


জামায়াত এই যৌথ বিবৃতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, একটি নিরপেক্ষ সরকারের প্রধান হয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এতে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং একতরফাভাবে বিএনপিকে প্রাধান্য দেওয়ার বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছেছে।


জামায়াত নেতারা বলেন, “এভাবে একক আলোচনা ও ঘোষণা দিয়ে সরকার প্রকারান্তরে বিএনপিকে একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে। এতে রাজনৈতিক ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্যান্য দল প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বে।”


তারা আরও বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের মতো আবারও এক-এগারো ধরনের ‘সেফ এক্সিট’ কৌশলের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পরেই নির্বাচনের সময় ঘোষণা দেওয়া হলে তা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হতো।


এদিকে, মঙ্গলবারের সংলাপে ৭০ অনুচ্ছেদ, সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনী পদ্ধতি এবং সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলোতে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।


সংলাপে যুক্ত জামায়াত নেতারা বলেন, “জামায়াত বহু ক্ষেত্রে নিজের অবস্থান বদলে আপস করেছে, কিন্তু বিএনপি প্রতিটি ইস্যুতে বাধা দিয়েছে। সরকারের আচরণে মনে হয়েছে, বিএনপি রাজি হলে তবেই সংস্কার হবে—এমন বার্তাই দেওয়া হচ্ছে। এতে করে সংলাপের মূল উদ্দেশ্যটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।”


তাদের মতে, যদি সরকার সব দলের সঙ্গে সমান আচরণ না করে, তবে জামায়াত সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে কিনা, তা নতুন করে ভাববে।

নীরব চাকলাদার

মন্তব্য করুন:

Post Bottom Ad
Sidebar Top Ad
Sidebar Botttom Ad