সরকারকে ‘ব্যর্থ’ আখ্যা দিয়ে এনসিপি’র ৩৬ দিনের কর্মসূচি

জুলাই সনদ ঘোষণা দিতে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আগামী ৩ অগাস্ট তারাই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে রবিবার (২৯ জুন) দলের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণার সময় তিনি এ কথা বলেন। বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের নেতা সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, অনিক রায়।
নাহিদ বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে বলে সরকার দায়িত্ব নিয়েছিল, ৩০ কার্যদিবসে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু তার কোনো উদ্যোগ নেই। সরকার যেহেতু বলেছিল সকলের সাথে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে দেবে, তা হয়নি; সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এজন্য ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে ৩ অগাস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। কারণ আমরা মনে করি, জুলাইয়ের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি প্রয়োজন। এতে জুলাইয়ের অন্যান্য অংশীজনদেরও আহ্বান জানানো হবে। অন্য কেউ না চাইলেও তা হবে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, ১ জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই ফ্যাসিস্টের পতনের অধ্যায় শুরু হয়। এ এক বছরে আমাদের অনেক প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। তাই জুলাই শহীদদের স্মরণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর আহতদের প্রতিও আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা গড়ে উঠেছে, তাতে জুলাইকে স্মরণে রাখতে হবে। জুলাই-অগাস্টের যে ৩৬ দিন তা স্মরণ করার দায়িত্ব সকলের।” তবে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করা দল এনসিপির দায়িত্ব অনেক বেশি বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ।
সারাদেশে পদযাত্রা বাস্তবায়নে একটি কমিটিও করা হয়েছে। জুলাই পদযাত্রা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১ জুলাই রংপুরে আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্যদিয়ে পদযাত্রা শুরু হবে এবং পরে তা বিভিন্ন জেলায় হবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই পদযাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা মানুষের আরো কাছে যেতে চাই। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের কাছে যেতে চাই এবং তাদের কথা শুনতে চাই।”
৩৬ দিনের কর্মসূচি
১. আগামী ১ জুলাই রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে পদযাত্রায় অংশ নেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ও তাদের খোঁজ খবর নেবেন। এরপর ঢাকায় ফিরবেন।
২. আবু সাঈদের মৃত্যুদিবস ১৬ জুলাইকে বৈষম্যবিরোধী শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এতে আবু সাঈদসহ অন্যান্য শহীদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করা হবে।
৩. ৩ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র ও ইশতেহার দিবস পালন করা হবে। ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্র ও ইশতেহার পাঠ করা হবে।
৪. ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার মুক্তি দিবস উদযাপন করা হবে। সেদিন সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হবে।
মীর্জা ইকবাল

মন্তব্য করুন: