সিলেটের কৃতিসন্তান ড.জামিলুর রেজা চৌধুরী

শুভ সকাল। আজ ৮ জুলাই মঙ্গলবার ২০২৫। দিনের শুরুটা ভালো কাটুক সকলের। আজ এই শুভ সকালে আমরা স্মরণ করতে চাই সিলেটের এক কীর্তিমান মানুষকে। যিনি শুধু একজন প্রকৌশলী ছিলেন না, ছিলেন বাংলাদেশ গঠনের এক নিঃশব্দ স্থপতি। আজকে সুপ্রভাতের পূর্বাহ্নে আমরা সেই স্মরণীয় ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু তথ্য তোলে ধরার চেষ্টা করবো।
দেশসেরা সেই স্থপতির নাম ড.জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, ও তথ্য-প্রযুক্তিবিদ। জামিলুর রেজা চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১৫ নভেম্বর সিলেট শহরে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পিতা প্রকৌশলী আবিদ রেজা চৌধুরী এবং মাতা হায়াতুন নেছা চৌধুরী। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। পিতার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার শৈশবকাল কেটেছে। তিন বছর বয়সে সিলেট ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে চলে যান আসামের জোড়হাটে। ১৯৪৭ সালের আগস্টে আবার সিলেটে ফিরে আসেন। এরপর তার পিতা বদলি হয়ে ময়মনসিংহে চলে যান।
ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক সম্পন্ন করেন।এরপর পাড়ি জামান যুক্তরাজ্যে। তিনি পিএইচডি করেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ হ্যামটন থেকে। ১৯৬৮ সালে সেখান তিনি পিএইচডি করেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ হ্যামটন থেকে। সেখান থেকে ফিরে দেশের মাটিতে জ্ঞানের চারা রোপন শুরু করে। তিনি ছিলেন বুয়েটের খ্যাতিমান শিক্ষক। বঙ্গবন্ধু সেতু মেট্রো রেল আর বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পে তিনি ছিলেন প্রধান কারিগরি পরামর্শক। তার হাতে গড়া শিক্ষার্থীরা আজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশ-বিদেশে।
তিনি ১৯৯৬ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ২০০১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ২০১২ থেকে আমৃত্যু ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ছিলেন। এছাড়া তিনি ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সভাপতি ছিলেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে তার অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।
২০২০ সালের ২৮ শে এপ্রিল তিনি ইন্তেকাল করেন। কিন্তু তার রেখে যাওয়া জ্ঞান নৈতিকতা আজও আলো ছড়ায় প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর মনের ভিতরে।
নীরব চাকলাদার

মন্তব্য করুন: