প্রসঙ্গ : যে কারণে সম্পর্ক রক্ষায় যত্নবান হওয়া জরুরী

যখন একটা ঘটনা ঘটে যায় এবং আপনার চারপাশের পরিচিত মানুষজন অথবা আত্মীয়স্বজন এর বিশ্লেষণ করতে বসে যে এই ঘটনায় কার দোষ এবং কে নির্দোষ, মনে রাখবেন, তখন কিন্তু তারা শুধুমাত্র বর্তমান ঘটনার প্রেক্ষিতে বিচার করে না। এর সাথে যোগ হয় আপনার আচরণের ধারাবাহিকতা। বিগত বছরগুলোতে আপনি কী কী করে রেখেছেন, মানুষের প্রতি কতটা সহৃদয়তা দেখিয়েছেন, কতটা নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছেন তার মার্কশিট ও কিন্তু তাদের হাতে থাকে। তবেই তো তারা বলে যে- অমুকে এই কাজটা করতেই পারে না; আমি বিশ্বাস করি না! অথবা, এটা অমুকেরই কাজ! ও যা যন্তর!! এই যে শংসা পত্রটা আপনি পাচ্ছেন, এটা আসলে বিগত বছরগুলোতে আপনার মানুষের প্রতি আচরণের গড়ফল।
একটা মানুষকে প্রভাবশালী দেখে তাকে তৈল মর্দন করলেন আর একজন মানুষ কে দুর্বল পেয়ে তার উপরে যথেচ্ছ অত্যাচার করলেন - তাতে ঈশ্বর আপনাকে শাস্তি দেবে - এমন কথা আমি বলি না। কারণ আমি যতটুকু জীবন কাটিয়েছি এখনও পর্যন্ত, তাতে দেখেছি অনেক অত্যাচারীও দিব্য চলাফেরা করছে। সুখে শান্তিতে রয়েছে। তাই সেরকম কোন ব্যাপার আছে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু যেটা আছে, সেটা হল , মানুষের ঘৃণা!! মানুষের সাথে অন্যায় করলে, সেই মানুষটা যদি দুর্বল হয় তো সে আপনার আচরণের সমুচিত প্রতিশোধ হয়ত নিতে পারবে না কিন্তু আমৃত্যু আপনাকে ঘৃণা করে যাবে!! আপনার মুখটা দেখলে তার গা ঘিনঘিন করবে, বমি আসবে!! আর এই ঘটনা যখন এমন কিছু সম্পর্কের মধ্যে ঘটে যেগুলো এড়িয়ে চলা যায় না, আজীবন বয়ে নিয়ে যেতে হয়, তখন সেই ঘৃণা সারাজীবনের জন্য দু'জনের মাঝখানে প্রাচীর তুলে দেয়!
রক্তের সম্পর্কগুলো হয়ত এ ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয়। কিন্তু বৈবাহিক সম্পর্ক বা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে এরকম ঘটলে সেই বিষের স্মৃতি সারাজীবনের মত জীবনকে বিষাক্ত করে দেয়।
তাই সম্পর্ক রক্ষায় যত্নবান হোন। কাছের মানুষগুলোর সাথে ভদ্রতা দেখান; সহৃদয়তা দেখান। কারণ একবার আগল ভেঙে গেলে কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও সেই আন্তরিকতা আর খুঁজে পাবেন না। আর আজকের দিনে মানুষ মানুষের সাথে সম্পর্কই রাখে খুব কম। তাই যতটুকু আছে , সেগুলোর যত্ন করুন। লালনপালন করুন। দেখবেন, শেষ বয়সে এই সম্পর্কগুলোই আপনাকে শান্তি দেবে। আপনার জীবনীশক্তিকে উজ্জীবিত করবে।
মীর্জা ইকবাল

মন্তব্য করুন: