সিলেটে উদীচীর মাইনাস থিওরি

একটি ইতিহাস, ঐতিহ্য আর আগুন ঝড়া সংগ্রামের নাম উদীচী। দেশের সকল গণতান্ত্রিক, মৌলবাদবিরোধী ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে এ সংগঠন বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার জন্য ২০১৩ সালে সংগঠনটি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক লাভ করে। প্রান্তিক মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামী প্রতীক সত্যেন সেন প্রতিষ্ঠিত সেই উদীচী এখন ভাঙ্গনের মুখে। হারাচ্ছে জৌলুস। কার্যক্রম নেই আগের মতো। ক্ষয়ে যাওয়া সময়েও গর্জে উঠেনা গণ সংগীতের আওয়াজ।নেই মাঠে-ঘাটে ময়দানে পদচারণা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হচ্ছে বিভাজিত। অদৃশ্য সূতোর টানে বিভাজিত ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে উদীচীর সকল শাখায়। ফলে তৃণমূলে বাড়ছে ত্যাগীদের বুক ফাটা আর্তনাদ।তবে আর্তনাদ থাকলেও শোধরানোর আওয়াজ নেই। নেই প্রত্যাশিত প্রতিশ্রুতি। দুযোর্গ-দুর্বিপাক,পূঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ রাষ্ট্রীয় শোষণ ব্যবস্থার বিপরীতে ঝলসে উঠা সিলেটের ধারালো তরবারি উদীচীর সিলেটের অবস্থা আরও ভয়াবহ, দু:খজনক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠনের সিলেটের অতীত ও বর্তমান সময় তোলে ধরছেন সংগঠনের সিলেট জেলা সংসদের সাবেক সাধারন সম্পাদক ইয়াকুব আলী। তার লেখাটি উদীচীর সমর্থক ও শুভাকাঙ্খিদের উদ্দেশ্যে হুবুহ তোলে ধরা হলো।
উদীচী সিলেটের সক্রিয় ও আপাত মস্তক উদীচীর কর্মী ইন্দ্রাণী সেন শম্পা। বলতে গেলে পারিবারিকভাবেই উদীচীর একনিষ্ঠ কর্মীসমৃদ্ধ পরিবার। উনার ভাই মিহির সেন, সমীর সেন, উত্তরা সেন পম্পা সহ পুরো পরিবার উদীচী সিলেটের সাথে সম্পৃক্ত। তবে, পম্পাদি ও মিহির দা, সমীর দা নিরবে নিস্ক্রিয় হয়ে যান। অন্যান্য সংগঠনে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন।
এই নিস্ক্রিয় হয়ে পড়া, চলে গিয়ে আরও আরও সংগঠনে সম্পৃক্ত হওয়া, সংগঠন তৈরি করা, ঝরে পড়া এসব নিয়ে কয়েকপর্ব লিখতে হবে। কিছু কিছু লিখতে হবেও। জরুরী।
এখন থাক, এখন মাইনাস ইন্দ্রাণী সেন শম্পার গল্প। কর্মঠকর্মী আবার নারী নেতৃত্ব সবগুণ মিলে শম্পাদি। অভিনয়েও পারদর্শী। সক্রিয় সদস্য হওয়ার ফলে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের কমিটিতে দীর্ঘদিন উদীচীর হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কখনও অর্থ, কখনও সংগঠন। জেলা সংসদ কমিটির অর্থসহ কয়েকটি বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন। এমনকি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তো যখনই কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ সাধারণ সম্পাদক পদ উনার প্রাপ্য এবং বিজীত, তখনই এরা আমাকে জোরে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়। নাম সরিয়ে নেয়ার বহু বিষয় উপস্থাপন করলেও, যারা বুঝিয়েছেন এটা মুলা, আমিও সেই মুলা বুঝেছি। আমার সরে আসার কোনো কারণ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি।
এখানে আরেকটি নাম আছে, ধ্রুব গৌতম! যার কাছে আমি চিরদিন লজ্জিত থাকবো। কেনোনা এরা আমাকে সম্পাদক আর ধ্রুব গৌতমকে যুগ্ম সম্পাদক করে কমিটি গঠন করে। যিনি প্রায় আমার বয়সের অধিক সময় সংগঠন করেন।
এটাও একটা প্যাচ, আরেকটি পর্বে গল্প হবে। এখন ইন্দ্রাণী বাদ কেনো? ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনীতি করেন। বাম সংগঠন হলেও রাজনীতি অন্য লাইনে। তাই সাধারণ সম্পাদক দেয়া যাবে না। কিন্তু কমিটির অন্য দায়িত্ব পালন করতে পারবে, গাদার মতো সংগঠনে শ্রম আর ঘাম দিতে পারবে। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক! কাভি নেহি!
তাই, এই মহিলাকে কত রকমের অপমান সংগঠন করেছে, অবমূল্যায়ন করেছে; তার ইয়ত্তা নেই। এই ১৬ সালেও হেলাল ভাই প্রস্তাব করেছিলেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শম্পাদির নাম, ঠেকেনি। তখনই শম্পাকে টক্কর দিতে দায়িত্ব দেয়া হয় সিনিয়র একজনকে।
যে পরিবারের প্রায় প্রতিটি সদস্য এক সময় উদীচীতে দলবেঁধে আসতো, তাদের ভাড়া বাসা বাড়িতে উদীচী জিনিসপত্র দিয়ে ঠেসে রাখা হলো প্রায় ৫/৭ বছর, তারা আজ কেউ উদীচীতে আসে না। কেউ একবার জিজ্ঞেসও করে না, কি হয়েছে!? জিজ্ঞেস করবে?
এরাতো কৌশলে বাদ দিয়েছে। এই থিওরিটা একদিন বলবো। কৌশলে বাদ দেয়ার থিওরি। আমাকে এক সহ সভাপতি শিখিয়েছেন। ইন্দ্রাণী সেনকে বাদ দিতে কি কি কৌশল এপ্লাই হয়েছে বলে আপনে মনে করেন!?
নীরব চাকলাদার

মন্তব্য করুন: