ইতিহাস-ঈতিহ্য
‘আমরা একটা বোকার রাজ্যে বাস করছি’

আমরা একটা বোকার রাজ্যে বাস করছি। আমরা অত্যন্ত আত্মমর্যাদাহীন মানুষদের মতো নিজেদের পরিচিতি উপস্থাপন করছি। আমাদের কেউ কেউ গোলামের পরিচয় এখনও দিয়ে যাচ্ছেন। তারা প্রমাণ করতে চাচ্ছেন আমরা একটি আত্মমর্যাদাহীন জাতি।
আমাদের কেউ কেউ নোবেল পুরস্কারকে মনে করছেন আকাশের মালিকের পক্ষ থেকে দানকৃত স্বর্গীয় সনদ কিংবা সর্বশক্তির জাদুর হাড়। অথচ পৃথিবীর সচেতন নাগরিকদের এমনও অনেক আছেন যারা দার্শনিক বার্নাট শো-এর মতো নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, কিন্তু ঘৃণার সাথে প্রত্যাখান করেছেন। পৃথিবীর অনেক জ্ঞানী-গুনী মানুষ ইতিহাস এবং বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে সর্বদাই নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তীকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে আসছেন। এই পুরস্কার যার নামে এবং যার টাকায় তিনি কে এবং তিনি এই টাকা লাভ করেছিলেন কীভাবে? তা আমাদের জানা থাকলে আমরাও ঘৃণা করতাম এই পুরস্কারকে।
আলফ্রেদ বের্নহার্ড নোবেল একজন সুয়েডীয় ই*হু*দী রসায়নবিদ এবং অস্ত্র নির্মাতা। তিনি মরনাস্ত্র ডায়নামাইটের আবিষ্কারক। বিখ্যাত ইস্পাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোফোর্স এর মালিক ছিলেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠানটি অন্যতম বৃহৎ অস্ত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ছিলো। তার নিজের নামে ৩৫০টি ভিন্ন ভিন্ন পেটেন্ট বা মরনাস্ত্র ছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হচ্ছে ডায়নামাইট। মৃত্যুর আগে উইল করে তিনি তার সুবিশাল অর্থ সম্পত্তি নোবেল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য রেখে যান। উইলে আরও বলে যান, নোবেল ইনস্টিটিউটের কাজ হবে প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার এর অর্থ প্রদান করা। অর্থাৎ মানুষ মারার অস্ত্র তৈরীকারক ও বিক্রেতা নোবেলের টাকায় তারই নামে তৈরীকৃত পুরস্কার আজ মানবতার জন্য পুরস্কার দেয়, এ থেকে আশ্চর্যজনক বিষয় আর কি হতে পারে? এই পর্যন্ত পৃথিবীতে যারাই এই পুরস্কার লাভ করেছেন তাদের বেশিরভাগই পশ্চিমাদের দালাল, তা ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়।
বাঙালী কবি রবীন্দ্রনাথকে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করা হয়েছে এই পুরস্কার গ্রহণের পর। বলা হয়ে থাকে, তিনি তাঁর দালালী পরিচিতিকে শিল-মহরকৃত করেছেন এই পুরস্কার গ্রহণের মাধ্যমে এবং নিজের কবিসত্তাকে ছোট করেছেন। দ্বিতীয় আরেকটি বিষয়, বৃটিশ রাজ পরিবার তার কলোনিয়াল দুনিয়া থেকে কোন কোন শাসককে ইতোপূর্বে রাজ দরবারে দাওয়াত দিয়েছে, স্যার উপাধী দান করেছে? একটু তালিকা ঘাটিয়ে দেখবেন। বিষয়টা বুঝার জন্য আমি জর্ডানের কিং হোসেন ও তার বাবার গদ্দারীর ইতিহাস পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
যারা ইতিহাস সচেতন এবং অহমের অধিকারী তারা মুহাম্মদ ইকবাল, এওয়ার্ড সাঈদ, ড. কলিম সিদ্দিকী, ড. ইয়াকুব জাকি, আহমদ ছফা কিংবা ইভেন রিডলীকে বারবার পড়ে বুঝতে পারেন পশ্চিমারা কেন কি করে? এই কথাগুলো আমি ছোটবেলা থেকেই বলে আসছি। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে আমার প্রকাশিত অঘোষিত ক্রু*সে*ড গ্রন্থে এই কথাগুলো স্পষ্ট রয়েছে। আমার অনেক কবিতায়ও এই কথাগুলো রয়েছে। স্মরণ রাখতে হবে বিশ্ব ফ্যাসিবাদের দালালী করে কোন দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করা যায় না।
মীর্জা ইকবাল / ২০২৫

মন্তব্য করুন: